সোমবার, ৬ আগস্ট, ২০১২

ভিন্ন খবর : কেমোথেরাপিতে ক্যান্সার বাড়ে!



ক্যান্সার চিকিত্সায় বহুল ব্যবহৃত কেমোথেরাপি রোগীকে সুস্থ না করে বরং ক্যান্সার আরও বাড়িয়ে দিতে পারে। সাম্প্রতিক এক গবেষণায় এমন প্রমাণ পাওয়া গেছে। রোববার নেচার মেডিসিন সাময়িকীতে প্রকাশিত গবেষণা প্রতিবেদনে এ দাবি করেছেন বিজ্ঞানীরা। তারা বলেছেন, কেমোথেরাপি সুস্থ দেহকোষের ক্ষতিসাধন করতে পারে যার ফলে ওই কোষগুলো বিশেষ একটি প্রোটিন নিঃসরণ করে। এতে করে ক্যান্সার আরও বাড়তে থাকে এবং পরবর্তী চিকিত্সার ক্ষেত্রে নেতিবাচক প্রতিরোধ ব্যবস্থা গড়ে ওঠে।
মানবদেহে কেমোথেরাপির মাধ্যমে ক্যান্সার কোষগুলো ধ্বংস করতে বেশ বেগ পেতে হয় অথচ একই আক্রান্ত কোষ গবেষণাগারে ধ্বংস করা যায় খুব সহজে—এর কারণ অনুসন্ধান করতে গিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের একদল গবেষক ‘সম্পূর্ণ অপ্রত্যাশিতভাবে’ উপরের তথ্য আবিষ্কার করেছেন। গবেষকরা ক্যান্সার আক্রান্ত মানুষের প্রোস্টেট গ্রন্থির টিস্যুর ওপর কেমোথেরাপির প্রভাব লক্ষ্য করতে গিয়ে দেখেন, এ থেরাপিটি প্রয়োগের পর পাশের সুস্থ কোষের ডিএনএ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
কেমোথেরাপি এমন এক ধরনের চিকিত্সা যা দ্রুত বিভাজনক্ষম কোষগুলোকে সংযত করে। এ ধরনের কোষ টিউমার বা ক্যান্সার আক্রান্ত অঙ্গে দেখা যায়। বিজ্ঞানীরা লক্ষ্য করেছেন, কেমোথেরাপিতে ক্ষতিগ্রস্ত কোষগুলো ডব্লিউএনটি১৬বি নামে এক ধরনের প্রোটিন ক্ষরণ করে যা ক্যান্সার আক্রান্ত কোষের প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে দেয়।
এ ব্যাপারে গবেষণার সহযোগী ফ্রেড হাচিনসন ক্যান্সার রিসার্চ সেন্টারের পিটার নেলসন বলেছেন, ডব্লিউএনটি১৬বি প্রোটিনের ক্ষরণ সম্পূর্ণ অপ্রত্যাশিত ঘটনা। ক্যান্সার কোষগুলো কেমোথেরাপিতে ক্ষতিগ্রস্ত পাশের কোষের কাছ থেকে এ প্রোটিন গ্রহণ করে। এতে কোষগুলো আরও বৃদ্ধি পায়, অন্য কোষে আক্রমণ করে এবং পরবর্তী চিকিত্সার কার্যকারিতা নষ্ট করে দেয়। গবেষণায় ক্যান্সার আক্রান্ত প্রোস্টেট গ্রন্থির টিস্যুর ক্ষেত্রে কেমোথেরাপির নেতিবাচক প্রভাবের প্রমাণ পেলেও স্তন ও জরায়ু ক্যান্সারের ব্যাপারে চিকিত্সায়ও একই প্রভাবের কথা বলেছেন বিজ্ঞানীরা। তারা বলছেন, এ গবেষণার ফল এখন ক্যান্সার চিকিত্সায় বিকল্প ও আরও উন্নত ব্যবস্থা উদ্ভাবনের পথনির্দেশ করছে। তবে, কেমোথেরাপি দেয়ার সময় ওই বিশেষ প্রোটিনের বিরুদ্ধে এন্টিবডি প্রয়োগ করলে ক্যান্সার কোষ ধ্বংসে ভালো ফল পাওয়া যায় বলে উল্লেখ করেছেন নেলসন।
তবে যাহোক, ক্যান্সার চিকিত্সায় এ যাবত্ আবিষ্কৃত সবচেয়ে কার্যকর এবং অত্যন্ত ব্যয়বহুল পদ্ধতি কেমোথেরাপি নিয়ে নতুন বিতর্কের জন্ম দেবে নতুন এ তথ্য। সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরের বিশেষ এ চিকিত্সা পদ্ধতিকে কেন্দ্র করে দুনিয়াজুড়ে (এমনকি বাংলাদেশেও) কোটি কোটি ডলারের যে বাণিজ্য দাঁড়িয়ে গেছে তাও হুমকির মুখে পড়তে পারে বলে মনে করছেন ওয়াকিবহালরা। সূত্র : বাংলানিউজ

0 comments:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Ads